নিষেধাজ্ঞা মামলা কি তা আজকের এই পোষ্টে জানব। ইনজাংশন বা নিষেধাজ্ঞা অস্থায়ী এবং চিরস্থায়ী হয়ে থাকে। এছাড়াও অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার পূর্বে অন্তর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা হয়ে থাকে।
আজকে আমরা অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা এবং চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। এছাড়াও আরও জানবো যে, চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা কখন মঞ্জুর করা হয় বা কখন চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান, ক্লিক করুন:
অস্থায়ী ইনজাংশন
অস্থায়ী ইনজাংশন হলো কোনো কিছু প্রতিরোধ করার জন্য নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বা আদালতের পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত কার্যকর হবে এমন একটি আদেশ। অস্থায়ী ইনজাংশন মামলার যে কোনো অবস্থাতেই আদালত আদেশ দিতে পারে বা মঞ্জর করা যায় এবং দেওয়ানী কার্যবিধি দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হয়।
চিরস্থায়ী ইনজাংশন
চিরস্থায়ী ইনজাংশন হলো মামলার শেষ শুনানির পর মামলার সকল সাক্ষ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে চূড়ান্ত ডিক্রি দ্বারা একটি আদেশ প্রদান করা হয় বা মঞ্জর করা হয় । যাহার মাধ্যমে মামলা বাদীকে চিরস্থায়ী ভাবে একটি অধিকার দেওয়া হয়। এবং বিবাদী কে একটি অধিকার প্রয়োগ হতে বা একটি কাজ করা হতে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয় যাহা মামলার বাদীর অধিকারের বিপরীত হয়ে থাকে।
চিরস্থায়ী ইনজাংশন যখন মঞ্জর করা হয়
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ১৮৭৭ এর ৫৪ ধারার অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত অথবা এই অধ্যায়ের উল্লেখ আছে অন্যান্য বিধানের অধীনে মামলার বাদীর নিজ পক্ষে সমস্যা প্রকাশ্য হােক বা অনুমিত হােক কোনো সমস্যা করাকে প্রতিরোধ করার জন্য চিরস্থায়ী ইনজাংশন মঞ্জর করা হয়ে থাকে।
সাধারণ ভাষায় বলা যায় যে,যখন মামলার বিবাদী, মামলার বাদীর সম্পত্তি তে অধিকার দাবি করে বা স্বত্বভোগের অনধিকার হস্তক্ষেপ বা দাবি করে অথবা হস্তক্ষেপ করার বা বে-দখল করার হুমকি দেয় তখন আদালত নিম্নোক্ত কারণে চিরস্থায়ী ইনজাংশন মঞ্জর দিয়ে থাকে।
১। যেখানে বিবাদী বাদীর জন্য সম্পত্তির জিম্মাদার বা অধিকার লঙ্ঘনের কারণে কাজে বাস্তব ক্ষতি বা সম্ভাব্য ক্ষতি হবার কারণ আছে। বা কারোর অধিকার লঙ্ঘন এমন ধরনের হতে পারে যে, আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে তা পর্যাপ্ত প্ৰতিকার করা সম্ভব হবে না। বা ক্ষতি হবার পরে আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাওয়া সম্ভব হবে না। এছাড়াও বিচার বিভাগীয় কাজের ধারার জটিলতা সমাধানের জন্য ইনজাংশন প্রয়োজনীয় হয়।
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ১৮৭৭ এর ৫৪ ধারার ব্যাখ্যা
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ১৮৭৭ এর ৫৪ ধারার উদ্দেশ্য অনুযায়ী ট্রেড-মার্ক সম্পত্তি বলে গণ্য করা হবে।
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ১৮৭৭ এর ৫৪ ধারার উদাহরণ
উদাহরণ ১। রহিম, করিম -কে নির্দিষ্ট জমি ভাড়া দেয় এবং করিম সেখান থেকে মাটি খনন না করার জন্য চুক্তিবদ্ধ করেন। করিম-কে চুক্তি লঙ্ঘন করার করে খনন কাজ থেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে ইনজাংশন জারির জন্য মামলা করতে পারবেন।
উদাহরণ ২। একজন জিম্মাদার জিম্মা চুক্তি ভঙ্গ করার হুমকি দিয়ে থাকে। তাহলে অবশ্যই মালিক চুক্তি ভঙ্গ করার জন্য চুক্তি ভঙ্গ নিরোধের উদ্দেশ্যে ইনজাংশন জারির জন্য মামলা করতে পারবেন।
উদাহরণ ৩। একটি কোম্পানীর ডিরেক্টর আসল অর্থ বা ঋণ করা অর্থ থেকে মুনাফা প্রদানে উদ্যোগী হয়। তাহলে যে কোনো অংশীদার তাদিগ কে এই বিষয় থেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে ইনজাংশন জারির জন্য মামলা করতে পারবেন।
উদাহরণ ৪। একটি সাধারণ বীমা ও জীবন বীমা কোম্পানীর ডিরেক্টরগণ একটি নৌ-বীমা করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে। এবং তাদিগ কে এই বিষয় থেকে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে ইনজাংশন জারির জন্য যে কোনো অংশীদার মামলা করতে পারবেন।
উদাহরণ ৫। রহিম সাহেব একজন জিম্মাদার এবং করিম এর জিম্মা সম্পত্তির একটি ছোট অংশ অযৌক্তিক ভাবে বিক্রয়ের উদ্যোগ নেয়। তাহলে করিম সাহেব বিক্রয় হতে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে ইনজাংশন জারির জন্য মামলা করতে পারবেন
উদাহরণ ৬। শফিক সাহেব, তার সন্তানদের নামে সম্পত্তির পত্তন করেছেন।তারপর ঐ সম্পত্তি অন্য কোনো ব্যাক্তির নিকট বিক্রয় করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। এবং এই বিক্রয় হতে বিরত রাখার উদ্দেশ্যে ইনজাংশন জারির জন্য তার যে কোনো সন্তান মামলা করতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ পুলিশ গ্রেফতারি ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেফতার করতে পারবেন।