বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিচয় পরিচিতি জন্য জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করা টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এজন্য আজ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণী জানার চেষ্টা করবো।
নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান, ক্লিক করুন:
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন (জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন)
বাংলাদেশের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন অনুযায়ী জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের জন্য ¾ ব্যাক্তিগণ নিবন্ধক হিসাবে দায়িত্ব করতে পারবেন।
১। সিটি কর্পোরেশন
২। পৌরসভা
৩। ইউনিয়ন পরিষদ
৪। ক্যান্টনমেন্ট
সিটি কর্পোরেশন এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাসকারী ব্যাক্তিদের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম কর্পোরেশন এর মেয়র বা প্রশাসক কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা অথবা কাউন্সিলর নিবন্ধক হিসেবে দায়িত্ব পালন করিবেন।
পৌরসভা এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাসকারী ব্যাক্তিদের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম পৌরসভা মেয়র বা প্রশাসক কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা অথবা কাউন্সিলর নিবন্ধক হিসেবে দায়িত্ব পালন করিবেন।
ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাসকারী ব্যাক্তিদের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা অথবা সদস্য নিবন্ধক হিসেবে দায়িত্ব পালন করিবেন।
ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাসকারী ব্যাক্তিদের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা বা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা নিবন্ধক হিসেবে দায়িত্ব পালন করিবেন।
বাংলাদেশের বাহিরে বা বিদেশে বসবাসরত জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বিষয়ক কার্যক্রম বাংলাদেশীর জন্য দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা নিবন্ধক হিসেবে দায়িত্ব পালন করিবেন।
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কারার জন্য একই এলাকা ভিত্তিক একই সময়ে এবং একাধিক ব্যাক্তি নিবন্ধক হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন
বাংলাদেশের সকল জাতি,ধর্ম,বর্ণ,গোষ্ঠী, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল ব্যাক্তির জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সকল তথ্য নিবন্ধক নিবন্ধন বহিতে নিবন্ধন বা সংরক্ষণ করিবেন।
আপনার এলাকার কোনো ব্যাক্তির জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন করার জন্য সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ বা ক্যান্টনমেন্ট কার্যালয়ে দায়িত্বরত নিবন্ধকের নিকট তথ্য প্রেরণ করিবেন ৷ এবং আপনার প্রদানকৃত তথ্য সঠিক এবং উক্ত জন্ম বা মৃত্যু ইতিপূর্বে কোনো নিবন্ধিত হয় নাই এই মর্মে একটি ঘোষণা লিপিবদ্ধ করবেন।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকের দায়িত্ব
বাংলাদেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করার জন্য নিবন্ধকের বেশ কিছু দায়িত্ব রয়েছে। এরমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু দায়িত্ব উল্লেখ করিলাম।
বাংলাদেশের সকল ব্যক্তির জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন,সকল কার্যাবলী, নথিপত্র নিবন্ধন বহিতে নিবন্ধন বা সংরক্ষণ করতে বাধ্য থাকিবে।
নিবন্ধনের কার্যক্রম সুবিধার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করবেন। , নির্দিষ্ট সময়ে ফরম,রেজিস্টার ও সনদ তৈরি বা সংগ্রহ করবেন। এবং জন্ম ও মৃত্যু সনদ সরবরাহ করিতে বাধ্য থাকিবে।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকের ক্ষমতা
বাংলাদেশে কোনো ব্যাক্তির জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করার জন্য দায়িত্বরত নিবন্ধক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যাক্তির দ্বারা তথ্যের সত্যতা অনুসন্ধান করিতে পারিবেন।
এছাড়াও কোনো ব্যাক্তি নির্দিষ্ট সময়ে জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন না করে, তবে দায়িত্বরত নিবন্ধক সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তির পিতা মাতা বা সন্তানদের বা অবিভাবকের নিকট জন্ম বা মৃত্যুর তথ্য প্রদানের জন্য নোটিশ জারী করতে পারবেন। এছাড়াও নিবন্ধক তদন্ত/অনুসন্ধান সাপেক্ষে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যাক্তির নিবন্ধন বহি তলব করতে পারবেন এবং সাক্ষীর জন্য যে কোনো ব্যাক্তিকে নোটিশ দিতে পারবেন।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন রেজিষ্ট্রার জেনারেল নিয়োগ
বাংলাদেশের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন অনুযায়ী সরকার এই আইনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একজন রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং প্রয়োজনীয় কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা এবং কর্মচারী নিয়োগ করেন এবং সরকার অনুমোদিত তাদের চাকরির শর্তাবলী থাকিবে।এবং রেজিস্ট্রার জেনারেলের দায়িত্ব ও কার্যাবলী নির্দিষ্ট নিয়ম ধারা অনুযায়ী পরিচালনা হবে।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন তথ্য প্রদান
বাংলাদেশের সকল শিশুর পিতা মাতা বা অভিভাবক শিশুর জন্মের পঁয়তাল্লিশ(৪৫) দিনের মধ্যে জন্ম সংক্রান্ত তথ্য সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদ/ক্যান্টনমেন্ট(দেশের বাহিরে হলে দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত কর্তৃক) নিবন্ধকের নিকট তথ্য প্রদানের জন্য বাধ্য থাকিবেন৷
এছাড়াও মৃত ব্যাক্তির সন্তান বা অভিভাবক সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তির মৃত্যুর পঁয়তাল্লিশ(৪৫) দিনের মধ্যে মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদ/ক্যান্টনমেন্ট(দেশের বাহিরে হলে দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত কর্তৃক) নিবন্ধকের নিকট তথ্য প্রদানের জন্য বাধ্য থাকিবেন৷
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর দায়িত্ব
বাংলাদেশে যারা জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিকট তথ্য প্রেরণ করে দায়িত্ব পালন করবেন। তা নিম্নে সংক্ষিপ্ত বিবরণী তুলে ধরা হলো।
ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য, এবং সচিব বা গ্রাম পুলিশের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভা এলাকার জন্য সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিকট তথ্য প্রেরণ করে দায়িত্ব পালন করবেন।
একই ভাবে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন বা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার জন্য নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মী অথবা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিকট তথ্য প্রেরণ করে দায়িত্ব পালন করবেন।
একই ভাবে সরকার বা বেসরকারি ক্লিনিক বা হাসপাতাল বা কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্ম ও মৃত্যুর ক্ষেত্রে দায়িত্ব প্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার বা ডাক্তার অথবা ক্ষমতা প্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিকট তথ্য প্রেরণ করে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও কোনো গোরস্থান অথবা শ্মশান ঘাটের দায়িত্ব প্রাপ্ত বা তত্ত্বাবধায়ক জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিকট তথ্য প্রেরণ করে দায়িত্ব পালন করবেন।
একই ভাবে জেলখানায় জন্ম ও মৃত্যুর ক্ষেত্রে জেল সুপার অথবা জেলার বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিকট তথ্য প্রেরণ করে দায়িত্ব পালন করবেন। যদি পরিত্যক্ত শিশু বা জন সাধারণ স্থানে পড়িয়া থাকা বা পরিচয়হীন মৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে নিকটস্থ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিকট তথ্য প্রেরণ করে দায়িত্ব পালন করবেন।
শিশুর নাম নির্ধারণ
জন্ম নিবন্ধন করার আগে শিশুর নাম নির্ধারণ করা দরকার। তবে নাম নির্ধারণ করা না হলে ও জন্ম নিবন্ধন করতে পারবেন। এরপর নির্দিষ্ট শর্ত থাকে যে, জন্ম নিবন্ধন করার পরবর্তী ৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধন কার্যালয়ে শিশুর নাম প্রেরণ করতে হবে।
জন্ম ও মৃত্যু সনদ প্রদান
কোনো ব্যাক্তির জন্ম বা মৃত্যুর সনদ প্রদানের জন্য, কোনো ব্যাক্তি নির্ধারিত ফি সহ আবেদন করিলে সিটি কর্পোরেশন/ পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদ /ক্যান্টনমেন্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ নিবন্ধিত ব্যাক্তির জন্ম বা মৃত্যু সনদ প্রদান করিবেন৷
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধান
বাংলাদেশের নাগরিক এবং কোনো ব্যাক্তি লিখিত আবেদন এবং নির্ধারিত ফি প্রদান করে নিবন্ধন বহির জন্ম ও মৃত্যু যে কোনো তথ্য যাচাইয়ের জন্য নিবন্ধকের নিকট আবেদন করতে পারবেন। তবে শর্ত থাকে যে, মৃত্যুর কারণ জানার জন্য জানার জন্য আবেদন করা অন্তর্ভুক্ত নয়। আবেদনে পাওয়া তথ্য নিবন্ধক কর্তৃক সত্যায়িত করা হবে এবং তা সাক্ষী হিসেবে গ্রহণ করা হবে।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বিলম্বিত নিবন্ধন
যদি কোনো ব্যাক্তি নির্দিষ্ট সময়ে জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধন না করে থাকে। তবে সেই ব্যাক্তি পরবর্তীতে আবেদন সাপেক্ষে এবং নির্দিষ্ট ফি পরিশোধ করে নিবন্ধন করতে পারবেন। তবে জন্ম ও মৃত্যুর দুই বছর পর্যন্ত ফি লাগবে না। দুই বছরের অতিবাহিত হলে ফি পরিশোধ করে আবেদন করতে হবে।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন রেকর্ড সংরক্ষণ
সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদ/ক্যান্টনমেন্ট সহ দায়িত্ব প্রাপ্ত নিবন্ধক জন্ম ও মৃত্যু ফরমে লিপিবদ্ধ করিয়া নিবন্ধন বহি সংরক্ষণ করিবেন।আর এই নিবন্ধন বহি একটি স্থায়ী জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন রেকর্ড ৷এই জন্য ও মৃত্যু নিবন্ধন বহি হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হলে নিবন্ধক এর জন্য দায়ী থাকবেন৷
জন্ম ও মৃত্যু সনদ সংশোধন
বাংলাদেশের নাগরিকের জন্য নিবন্ধন বহিতে জন্ম বা মৃত্যু সংক্রান্ত সনদে কোনো ভুল তথ্য লিপিবদ্ধ হয়। তাহলে সংশ্লিষ্ট নিবন্ধক বরাবর সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন এবং আপনাকে এর জন্য নির্ধারিত ফি পরিশোধ করতে হবে।
কোনো ব্যাক্তি যদি জন্ম বা মৃত্যু সনদ পাবার ৯০ দিনের মধ্যে জানতে পারে যে,তাহার জন্ম বা মৃত্যু সনদে কোনো প্রকার ভুল আছে। এবং নিবন্ধক বরাবর লিখিত আবেদন করেন তাহলে আবেদনের ৩০ দিনের মধ্যে আবেদন কার্যকর হবে।
নিবন্ধক যদি সংশোধন করে থাকেন তাহলে আবেদন প্রাপ্তির ৩০কার্য দিনের মধ্যে নিবন্ধন বহিতে সংশোধিত স্থানে তারিখ সহ স্বাক্ষর করিবেন এবং সংশোধিত সনদ প্রদান করবেন এবং ইতিপূর্বে সনদ সংরক্ষণের জন্য আবেদনকারীর নিকট থেকে ফেরত নিবেন।
এবং নিবন্ধক যদি পর্যালোচনা করে দেখেন যে, সংশোধনের কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই তাহলে আবেদন টি বাতিল করবেন এবং লিখিত আবেদনের মাধ্যমে জানিয়ে দিবেন।
এছাড়াও জন্ম বা মৃত্যু সনদ প্রাপ্তির ৯০ দিন অতিবাহিত হলে যদি আবেদন করার হয় তাহলে আবেদন প্রাপ্তির ১০ কার্য দিনের মধ্যে নিবন্ধক সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক বা সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার অথবা নিবন্ধক রেজিস্ট্রার জেনারেলের নিকট পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য প্রেরণ করবেন।
সংশ্লিষ্ট আবেদন প্রাপ্তির ১৫ কার্য দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার বা জেলা প্রশাসক অথবা রেজিস্ট্রার জেনারেল আবেদন পর্যালোচনা করবেন।এবং আবেদন গ্রহণ বা বাতিল করার আদেশ সংশ্লিষ্ট নিবন্ধক বরাবর পাঠাবেন।যদি আবেদন বাতিল করা হয় তাহলে নিবন্ধক আদেশ পাওয়া ৭ কার্য দিনের মধ্যে লিখিত ভাবে জানিয়ে দিবেন।
এছাড়াও আবেদন গ্রহণ করিলে সংশ্লিষ্ট নিবন্ধক আদেশ পাওয়ার ৭ কার্য দিনের মধ্যে নিবন্ধন বহি বা জন্ম বা মৃত্যু সনদ সংশোধন করবেন এবং সংশোধিত স্থানে তারিখ সহ স্বাক্ষর করবেন। এবং সংশোধিত সনদ প্রদান করবেন এবং পূর্বের সনদ সংরক্ষণের জন্য ফেরত নিবেন।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন তত্ত্বাবধান ও পরিদর্শন
বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যাক্তি নিবন্ধকের কার্যালয়, নিবন্ধন বহি বা নিবন্ধন সংক্রান্ত সকল প্রকার কার্যক্রম পর্যালোচনা ও পরিদর্শন করতে পারবেন৷
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন প্রতিবেদন
বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনে, নিবন্ধকের নিকট থেকে নিবন্ধন সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য বা প্রতিবেদন তলব করতে পারবেন এবং নিবন্ধক তা সরকারের নিকট প্রেরণ করতে বাধ্য থাকবেন৷
জন্ম বা মৃত্যু সনদের সাক্ষ্য মূল্য
বাংলাদেশের নাগরিক নিজ বয়স, জন্ম বা মৃত্যু বৃত্তান্ত প্রমানের জন্য কোনো আদালত, অফিস বা সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অথবা স্কুল কলেজে সাক্ষ্য প্রমানের জন্য গ্রহনযোগ্য হবে।
বাংলাদেশের নাগরিক কেনো বয়স প্রমানের জন্য নিম্নোক্ত কাজে সংশ্লিষ্ট প্রাপ্ত জন্ম সনদ গ্রহণ যোগ্য হবে।
১। পাসপোর্ট ইস্যু
২। বিবাহ নিবন্ধন
৩। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি
৪। সরকারী বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ
৫। ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু
৬। ভোটার নিবন্ধন
৭। জমি রেজিস্ট্রেশন
৮। জাতীয় পরিচয়পত্র
৯। লাইফ ইন্স্যুরেন্স পলিসি
বাংলাদেশ নাগরিক কেনো ব্যাক্তির মৃত্যু প্রমানের জন্য নিম্নোক্ত কাজে সংশ্লিষ্ট প্রাপ্ত মৃত্যু সনদ ব্যবহার করতে পারবেন।
১। সাকসেশন সার্টিফিকেট প্রাপ্তি
২। পারিবারিক পেনশন প্রাপ্তি
৩। মৃত ব্যক্তির লাইফ ইন্স্যুরেন্স দাবী
৪। নাম জারী
৫। জমাভাগ প্রাপ্তি
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আপীল
বাংলাদেশের নাগরিক নিবন্ধকের কোনো আদেশের বিরুদ্ধে ৩০ দিনের মধ্যে নিম্নোক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট আপীল করতে পারবেন।
ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অথবা সদস্যের কোনো আদেশের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আপীল করতে পারবেন।
পৌরসভা মেয়র বা প্রশাসক/ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এর নির্বাহী কর্মকর্তা/সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অথবা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা অথবা কাউন্সিলর এর আদেশের বিরুদ্ধে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট/জেলা প্রশাসকের নিকট আপীল করতে পারবেন।
এছাড়াও রাষ্ট্রদূত কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কোনো আদেশের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর আপীল করতে পারবেন।
উপরোক্ত আদেশের বিরুদ্ধে আবার আপীল করতে পারবেন। উপরোক্ত আদেশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে নিম্নোক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট আপীল করতে পারবেন।
১। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর আদেশের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের নিকট আপীল করতে পারবেন।
২। জেলা প্রশাসকের আদেশের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্রার জেনারেলের নিকট আপীল করতে পারবেন।
৩। রেজিস্ট্রার জেনারেলের আদেশের বিরুদ্ধে সচিব বা স্থানীয় সরকার বিভাগের নিকট আপীল করতে পারবেন।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দণ্ডনীয় অপরাধ
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ২০০৪ এর ধারা ২১। (১) আইন অনুযায়ী জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘনকারী ব্যাক্তির অনধিক ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড হবে। এছাড়াও উপ-ধারা (২) অনুযায়ী কোনো ব্যাক্তি জন্ম বা মৃত্যু নিবন্ধনের জন্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকে বা লিখিত কিছু প্রদান করে থাকে এবং এটি মিথ্যা বলে জানে বা বিশ্বাস করে। তাহলে ঐ ব্যক্তি অনধিক ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা অনধিক এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হবে।