জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করার নিয়মঃ প্রচলিত সময়েও জাতীয় পরিচয় পত্রে নাম, ঠিকানা বা অন্য কোনো অংশ ভুল হয়ে থাকে। যদি ও আপনার ক্ষেত্রে না ও হয়ে থাকে তবে জেনে রাখা দরকার। যদি আপনি জাতীয় পরিচয় পত্র বা এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে চান, তাহলে কি কি লাগবে এবং কিভাবে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করবেন।তা নিয়ে বিস্তারিত জানবো।
যারা নতুন জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করেছেন বা জাতীয় পরিচয় পত্র অনলাইন থেকে ডাউনলোড করেছেন এবং আপনার নাম, পিতার নাম বা অন্য কোনো তথ্য ভুল আছে।তাহলে কি করবেন। এমতাবস্থায় চিন্তিত হবার কিছু নেই। আপনি চাইলে অনলাইনে সাত থেকে পনেরো দিনের মধ্যে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে পারবেন।
জানুনঃ Verify Paypal Account : ভেরিফাই পেপাল অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম।
নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান, ক্লিক করুন:
অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করার নিয়ম
এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে
বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করার জন্য নিম্নে উল্লেখিত যেকোনো দুইটি ডকুমেন্টস দিয়ে সংশোধন করতে পারবেন।
১। শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ
২। পাসপোর্ট
৩। ড্রাইভিং লাইসেন্স
৪। ডিজিটাল জন্ম সনদ কপি,
৫। এমপিও শীট/সার্ভিস বইয়ের কপি
৬। বিয়ের কাবিন নামা
৭। পিতা-মাতার এনআইডি কার্ড
৮। সন্তানদের আইডি কার্ড
৯। প্রয়োজন ক্ষেত্রে অন্যান্য কাগজপত্র
জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য সংশোধনের ধরণ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো আলাদা হতে পারে। এনআইডি সংশোধনের ধরন অনুযায়ী আরও যে সব কাগজপত্র লাগতে পারে তা নিচে উল্লেখ করা হলো।
জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম সংশোধন
এনআইডি কার্ডের নাম সংশোধন করার জন্য এসএসসি/এইচএসসি বা সমমানের সার্টিফিকেট লাগবে। জন্ম সনদ অনলাইন সার্টিফাইড কপি লাগবে। পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স লাগবে। এমপিও শীট বা সার্ভিস বই লাগবে। বিয়ের কাবিন নামা এবং কমপক্ষে দুই টি সন্তানের জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি যেখানে পিতা মাতার নাম সঠিক আছে। প্রয়োজন ক্ষেত্রে অন্যান্য কাগজপত্র লাগতে পারে।
জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্ম তারিখ সংশোধন
এনআইডি কার্ডের জন্ম তারিখ সংশোধন করার জন্য এসএসসি/এইচএসসি বা সমমানের সার্টিফিকেট লাগবে। জন্ম সনদ অনলাইন সার্টিফাইড কপি লাগবে। পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স লাগবে। এমপিও শীট বা সার্ভিস বই লাগবে। বিয়ের কাবিন নামা এবং কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়ন পত্র লাগবে। প্রয়োজন ক্ষেত্রে অন্যান্য কাগজপত্র লাগতে পারে।
জাতীয় পরিচয় পত্রের পিতা-মাতার নাম সংশোধন
এনআইডি কার্ডের পিতা মাতার নাম সংশোধন করার জন্য এসএসসি/এইচএসসি বা সমমানের সার্টিফিকেট লাগবে। জন্ম সনদ অনলাইন সার্টিফাইড কপি লাগবে। পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স লাগবে। পিতা-মাতার জন্ম সনদ এবং এনআইডি কার্ড লাগবে। যারা চাকরি করেন তাদের জন্য অফিস প্রধানের প্রত্যয়ন পত্র লাগবে। ওয়ারিশান সার্টিফিকেট/সনদ লাগবে। তবে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অন্যান্য কাগজপত্র লাগতে পারে। এছাড়া ও ভাই বোনের এনআইডি কার্ড লাগবে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অন্যান্য কাগজপত্র লাগতে পারে।
এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে
জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য সংশোধন করার জন্য নির্ধারিত ফি ৳ ২৩০ টাকা। এছাড়াও জাতীয় পরিচয় পত্রের অন্যান্য তথ্য সমূহ সংশোধন করার জন্য নির্ধারিত ফি ৳ ১১৫ টাকা। একই ভাবে সকল ধরনের তথ্য সংশোধন করার জন্য নির্ধারিত ফি ৳ ৩৪৫ টাকা। স্মার্ট জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করার জন্য আবেদন করলে সংশোধনের ধরনের উপর নির্ভর করে সংশোধন ফি আলাদা হবে। এবং জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফি বাংলাদেশী মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ/রকেট সহ অন্যান্য পেমেন্ট মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন। তবে সময়ের সাথে এই নির্ধারিত ফি গুলো পরিবর্তন হতে পারে।
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের ধরণ ও ফি পরিমাণ
- ১। তথ্য সংশোধন ৳ ২৩০ টাকা
- ২। অন্যান্য তথ্য সংশোধন ৳ ১১৫ টাকা
- ৩। সর্ব তথ্য সংশোধন ৳ ৩৪৫ টাকা
- ৪। রি-ইস্যু সংশোধন ৳ ৩৪৫ টাকা
- ৫। রি-ইস্যু জরুরী সংশোধন ৳ ৫৭৫ টাকা
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন আবেদন করার নিয়ম
এনআইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য services.nidw.gov.bd/nid-pub/ সাইটে ভিজিট করুন। এরপর জাতীয় পরিচয় পত্র বা ফর্ম নাম্বার এবং জন্ম তারিখ লিখুন এবং একটি ক্যাপচারের উপর লিখা দেখে দেখে লিখুন এবং সাবমিট এ ক্লিক করুন। এরপর লগইন করুন। এরপর প্রোফাইল যান এবং এডিট লিংকে ক্লিক করুন এবং আপনার ভুল তথ্য গুলো পরিবর্তন করে সঠিক তথ্য গুলো লিখুন। এবং সংশোধন ফি পরিশোধ করুন এরপর প্রমাণপত্র আপলোড করুন এবং আবেদন জমা দিন। এরপর আপনার আবেদন টি মঞ্জুর/অনুমোদন হলে জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য সংশোধন হবে।
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন প্রক্রিয়া
এনআইডি কার্ড সংশোধন প্রক্রিয়া নিচে ধাপে ধাপে উল্লেখ করা হলো। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি নিজেই জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
প্রথম ধাপ – উপরে উল্লেখিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো স্ক্যান করে নিন অথবা ফ্রেশ ছবি তুলে নিন। এবং প্রয়োজনীয় সকল প্রমাণ গুলো নির্দিষ্ট সাইজের তৈরি করে নিন।
দ্বিতীয় ধাপ – services.nidw.gov.bd/nid-pub/ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন এবং রেজিষ্ট্রেশন করুন।
যদি অ্যাকাউন্ট করা থাকে বাতাহলে এনআইডি নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।
তৃতীয় ধাপ – এনআইডি একাউন্টে লগইন করুন এবং প্রোফাইল অপশনে ক্লিক করুন। এরপর তিন ধরণের অপশন দেখতে পাবেন।
- ১। ব্যক্তিগত তথ্য,
- ২। অন্যান্য তথ্য,
- ৩। ঠিকানা।
এই তিন ধরনের তথ্যের মধ্যে যে তথ্য সংশোধন করতে চাইছেন তার উপরের ডান পাশের এডিট বাটনে ক্লিক করুন এরপর তথ্যগুলো সংশোধন করার জন্য প্রয়োজনীয় অপশন পাবেন। এবং আপনি যে তথ্য সংশোধন করবেন, তার বাম পাশের টিক মার্ক অপশনে ক্লিক করুন। এরপর ভুল তথ্য গুলো সঠিক ভাবে লিখুন যা আপনার আপলোড করা তথ্যের সাথে মিল থাকে। এরপর পরবর্তী ধাপে জন্য পরবর্তী বাটন এ ক্লিক করুন। এরপর আপনার লেখা সকল তথ্য দেখতে পাবেন এবং সেই তথ্য ঠিক থাকলে পরবর্তী বাটন এ ক্লিক করুন।
চতুর্থ ধাপ – উপরের কাজ শেষ হলেএনআইডি সংশোধন ফি পরিশোধ করুন । এই সংশোধন ফি পরিশোধ না করা পর্যন্ত ওয়েবসাইট বা ব্রাউজার থেকে বাহিরে যাবেন না, ফি পরিশোধ করার পর অন্য কাজ করুন।
এনআইডি সংশোধন ফি জমা
উদাহরণ স্বরূপ বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করার জন্য বিকাশ অ্যাপে লগইন করুন।এরপর “পে – বি ল” অপশনে ক্লিক করুন। এরপর “সরকারি ফি” সিলেক্ট করুন এবং নিচের দিকে NID Service নামে অপশন দেখতে পাবেন, সেখানে ক্লিক করুন। এরপর আবেদনের ধরন সিলেক্ট করুন। এর আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার টি (ইংরেজি) লিখুন। এরপর “পে বিল করতে এগিয়ে যান” অপশনে ক্লিক করুন। এরপর আপনার বিকাশ পিন নাম্বার টি দিন এবং ফি পেমেন্ট সম্পুর্ন করুন।
সংশোধন ফি পেমেন্ট সম্পুর্ন হলে এনআইডি ওয়েবসাইটে আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করুন এবং সাবমিট এ ক্লিক করুন।