আমাদের জানতে হবে যে, জিডি কি? জিডি’র পূর্ণরুপ হলো:- General Dairy. যাহা আমরা বাংলায় সাধারণ ডায়েরি বলে থাকি। আমাদের কোনো কিছু হারিয়ে গেলে,প্রাণনাশের হুমকি দিলে, কেউ ভয় ভীতি দেখালে অথবা নিরাপত্তা নিয়ে ভয় থাকলে আমরা থানা’র ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অফিসার ইনচার্জ) কে লিখিত ভাবে যে আবেদনের মাধ্যমে জানাই তাকে জিডি বা সাধারণ ডায়েরি বলে । সাধারণ ভাবে বলা যায় যেসব ক্ষেত্রে মামলা করা হয় না বা প্রয়োজন মনে করেন না সেসব ক্ষেত্রেই জিডি করা হয়।
নিচের যে অংশ থেকে পড়তে চান, ক্লিক করুন:
কি কি কারণে জিডি করবেন?
১। কেউ আপনাকে হুমকি দেয়।
২। কোনো কিছু হারিয়ে গেলে যেমনঃ- মোবাইল ফোন,সার্টিফিকেট,মুল্যবান দলিল-পত্র,প্রয়োজনীয় কাগজপত্র,জাতীয় পরিচয় পত্র,পাসপোর্ট, চেকবই, লাইসেন্স ইত্যাদি আরো গুরুত্বপূর্ণ যেকোন কিছু হারিয়ে গেলে জিডি করতে হয়।
৩। কোনো ব্যক্তি অপরাধ মূলক ষড়যন্ত্র বা অপরাধ সংগঠনের আশঙ্কা দেখা দিলে।
৪। কোনো ব্যক্তি হারিয়ে গেলে।
৫। অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা ঘটতে পারে এমন বিষয়ে অবগত হলে বা জানতে পারলে।
৬। কেউ আপনার উপর আক্রমণ করতে পারে এমন সন্দেহ মনে হলে।
৭। আপনার সম্পত্তির ক্ষতি করতে পারে বা হতে পারে এমন সম্ভাবনা দেখা দিলে।
৮। কোনো অপরাধ মূলক ষড়যন্ত্র বা অপরাধ বিষয়ে থানায় জানাতে।
৯। কেউ আপনার অথবা আপনার পরিবারের ক্ষতি করতে পারে এমন আশংকা থাকলে।
১০। যে কোনো অপরাধ প্রতিরোধ করতে থানায় জানাতে।
কোথায় জিডি করবেন?
জিডি সাধারণত আপনার নিজ এলাকার থানায় করতে হয়। সাধারণ ভাষায় বলা যায় যে, আপনি যে থানার এরিয়ার মধ্যে বসবাস করেন সেই থানাতে করতে হবে। তবে আপনার কোনো কিছু যদি অন্য কোনো থানা সীমানার মধ্যে হারিয়ে যায়, তাহলে যে থানার সীমানায় হারিয়ে গেছে, সেই থানায় জিডি করতে হবে।
জিডি করার নিয়ম
আপনার জিডি করার প্রয়োজন হলে, আপনি যেই এলাকায় বসবাস করেন অথবা কোনো কিছু হারিয়ে গেলে, যেই এলাকার থানা সীমানার মধ্যে হারিয়ে গেছে ঐ থানায় জিডি করতে হবে । এরপর আপনি নিজে একটা আবেদন পত্র লিখতে পারেন। আর আপনি লিখতে না পারলে থানার সার্ভিস ডেলিভারি অফিসারের সাথে যোগাযোগ করবেন এবং একটি জিডি বা আবেদনপত্র লিখে দিতে অনুরোধ করেন ।থানার সার্ভিস ডেলিভারি অফিসারের সহায়তায় একটা জিডি বা আবেদনপত্র লিখে নিতে কোনো প্রকার টাকা পয়সা দিতে হবে না। এরপর আবেদনপত্র টি থানায় ডিউটি তে থাকা ডিউটি অফিসার কে দিন ।
জিডি দুইটি কপি করে নিবেন, একটি কপি থানায় সংরক্ষণের জন্য রাখবেন এবং আরেকটি কপি ডিউটি অফিসার ডাইরিতে জিডি’র নম্বর, সীলমোহর,স্বাক্ষর দিয়ে আপনাকে দিয়ে দিবেন। এরপর ডিউটি অফিসার জিডি নথিভুক্ত করবেন। এরপর জিডি’র কপি ডিউটি অফিসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(অফিসার ইনচার্জ) এর কাছে পাঠাবেন।থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অফিসার ইনচার্জ) যদি দেখেন বা মনে করেন ঘটনা টা আমলযোগ্য তাহলে সাথে সাথে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।
জিডি করতে কি কি উল্লেখ করতে হয়?
জিডি মূলত একটা আবেদন পত্র। আর একটি আবেদন পত্র লিখতে যে বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয় ঠিকআ ঐ বিষয়গুলোই উল্লেখ করতে হবে। নিচের উল্লেখ্য বিষয় গুলো জেনে নিনঃ-
১। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা (অফিসার ইনচার্জ) বরাবর লিখতে হবে।
২। থানা’র নাম এবং জেলা’র নাম।
৩। বিষয় লিখতে হবে, আপনি যে বিষয়ে জিডি করবেন সেই বিষয়।
৪। জিডি করার কারণ বিস্তারিত বর্ণনা দিতে হবে, ঘটনা, স্থান, কাল সহ বিস্তারিত উল্লেখ করতে হবে।যাহার বিরুদ্ধে জিডি করবেন তাহার নাম,পিতা-মাতার নাম,ঠিকানা, বয়স ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে। অথবা নাম না জানলে অজ্ঞাত নামা হিসেবে উল্লেখ করতে পারেন।
৫। শেষে নিবেদক বা আবেদনকারীর নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর দিতে হবে।
অনলাইনে জিডি করার নিয়ম
আপনি যদি দেশের বাহিরে থাকেন বা থানায় যেতে কোনো সমস্যা হয় অথবা যে বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন তাহলে অনলাইনে জিডি করতে পারবেন। অনলাইনে জিডি করলে ইমেইলে বা এসএমএস এর মাধ্যমে জিডি নম্বর সহ সকল তথ্য পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
অনলাইন জিডি
অনলাইনে জিডি করার জন্য http://www.police.gov.bd সাইটে গিয়ে Citizens help request এ ক্লিক করুন এরপর জিডি করতে হবে। অথবা গুগল প্লেস্টোর থেকে Online GD অ্যাপ ইনস্টল করে খুব সহজে জিডি করতে পারবেন।