ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৫৪ (১) অনুযায়ী যে কোনো পুলিশ অফিসার আদালতের আদেশ বা গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়া নিম্নোক্ত ব্যাক্তিগণ কে গ্রেফতার করতে পারবেনঃ-
পুলিশের ক্ষমতা ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৫৪ ধারা
১। কোনো আমল-যোগ্য অপরাধের সাথে জড়িত এমন কোনো ব্যাক্তি বা এই রূপ অপরাধে জড়িত আছে বলে, যার বিরুদ্ধে যুক্তি-সংগত অভিযোগ করা হয়েছে বা বিশ্বাস-যোগ্য খবর পাওয়া গেছে বা যুক্তি-সংগত কারণ বা সন্দেহ রয়েছে।আমলযোগ্য অপরাধ যেমনঃ- চুরি, ডাকাতি,খুন,ছিনতাই,ধর্ষণ ইত্যাদি। এমন ব্যাক্তি কে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৫৪ (১) অনুযায়ী যে কোনো পুলিশ অফিসার আদালতের আদেশ বা গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার করতে পারবেন।
২। আইন-সংগত কারণ ছাড়া কারোর কাছে ঘর ভাঙ্গার কোনো সরঞ্জাম রয়েছে। কিন্তু এই আইন সংগত কারণ প্রমাণ করার দায়িত্ব পুলিশের, কিন্তু ঘর ভাঙ্গার সরঞ্জামাদি নিজ হেফাজতে রাখার অপরাধ করেছে। ঘর ভাঙ্গার সরঞ্জামাদি যেমনঃ- শাবল,কুড়াল,লোহার রড, ভারী লোহার বস্তু ইত্যাদি। এমন ব্যাক্তি কে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৫৪ (১) অনুযায়ী যে কোনো পুলিশ অফিসার আদালতের আদেশ বা গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার করতে পারবেন।
৩। বাংলাদেশ সরকারের আদেশ অনুযায়ী যাকে অপরাধী ঘোষণা করা হয়েছে, এমন ব্যাক্তি কে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৫৪ (১) অনুযায়ী যে কোনো পুলিশ অফিসার গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করতে পারবেন।
৪। চোরাই মালামাল বলে যক্তি-সংগত ভাবে সন্দেহ রয়েছে। এই রূপ মালামাল নিজ হেফাজতে রাখলে এবং যে ব্যাক্তি এই রূপ মাল সম্পর্কে কোনো অপরাধ করেছে, বলে যথাযথ যুক্তি-সংগত ভাবে সন্দেহ রয়েছে বা সন্দেহ করা যেতে পারে।এমন ব্যাক্তি কে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৫৪ (১) অনুযায়ী যে কোনো পুলিশ অফিসার আদালতের আদেশ বা গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার করতে পারবেন।
৫। পুলিশ অফিসারের যে কোনো কাজে বাধা দেওয়া ব্যাক্তি বা যে ব্যাক্তি আইন-সংগত হেফাজত থেকে পালিয়েছে বা পালানোর চেষ্টা করে। এমন ব্যাক্তি কে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৫৪ (১) অনুযায়ী যে কোনো পুলিশ অফিসার আদালতের আদেশ বা গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার করতে পারবেন।
৬। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী থেকে পালিয়েছে বলে যাকে যুক্তি-সংগত কারণ বা সন্দেহ রয়েছে বা সন্দেহ করা যেতে পারে। সশস্ত্র বাহিনী যেমনঃ- সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী ইত্যাদি। এমন ব্যাক্তি কে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৫৪ (১) অনুযায়ী যে কোনো পুলিশ অফিসার আদালতের আদেশ বা গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার করতে পারবেন।
৭।এমন কোনো অপরাধ যাহা বাংলাদেশে করা হলে সে টি অপরাধ হিসাবে শাস্তিযোগ্য হতো। এবং বাংলাদেশের বাইরে এই রকম কোনো কাজের সাথে জড়িত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে যুক্তি-সংগত অভিযোগ করা হয়েছে। বা বিশ্বাস-যোগ্য খবর পাওয়া গেছে বা যক্তি-সংগত কারণ বা সন্দেহ রয়েছে এবং সে ব্যাক্তি প্রত্যাপণ সম্পর্কিত কোনো আইন বা পলাতক অপরাধী আইন ১৮৮১ সাল অনুযায়ী বা অন্য কোনো ভাবে বাংলাদেশে গ্রেফতার হতে বা হেফাজতে আটক থাকতে বাধ্য। এমন ব্যাক্তি কে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৫৪ (১) অনুযায়ী যে কোনো পুলিশ অফিসার আদালতের আদেশ বা গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার করতে পারবেন।
৮। কোনো মুক্তিপ্রাপ্ত আসামী যে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৫৬৫ ধারার (৩) উপধারা অনুযায়ী মুক্তি পাবার পর বাসস্থান পরিবর্তন বা বাসস্থানে অনুপস্থিত বা প্রণীত কোনো নিয়ম লংঘন করলে, এমন ব্যাক্তি কে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৫৪ (১) অনুযায়ী যে কোনো পুলিশ অফিসার আদালতের আদেশ বা গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার করতে পারবেন।
৯। এমন কোনো ব্যাক্তি যাকে গ্রেফতার করার জন্য অন্য কোনো পুলিশ অফিসারের নিকট থেকে অনুরোধ পাওয়া গেছে। যাকে গ্রেফতার করা হবে তার অপরাধ বা যে কারণে গ্রেফতার করা হবে সেই কারণ সহ অনুরোধ প্রেরণ করেছেন।এমন ব্যাক্তি কে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ৫৪ (১) অনুযায়ী যে কোনো পুলিশ অফিসার আদালতের আদেশ বা গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার করতে পারবেন।
উপসংহার
ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৫৪ ধারায় বাংলাদেশ পুলিশ কে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কারণ বড় ধরনের অপরাধী কে এই ধারা অনুযায়ী যে কোনো সময় যে কোনো ব্যাক্তি বা অপরাধী কে গ্রেফতার করতে পারবেন। এর জন্য আদালতের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। যার কারনে দেশের অপরাধ দমনের ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ৫৪ ধারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অনেকেই এই আইন সম্পর্কে বিস্তারিত না জেনেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে আইনের অপব্যবহারের অ়ভিযোগ করে থাকেন। তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে আইনের অপব্যবহারের অ়ভিযোগ করলে তারও যথাযথ কারণ বা প্রমাণ থাকা জরুরি।