১০৭ ধারা মামলা কি এবং বিস্তারিত

১০৭ ধারা মামলা কি : সাধারণ ভাষায় বলা যায় যে, যে কোনো ব্যাক্তি কে হুমকি দেওয়া হলে, ভুক্তভোগী হুমকি থেকে প্রতিকার পাইবার জন্য ১০৭ ধারার মামলা করে থাকেন। তবে হুমকি টা এমন হতে পারে যে, যে কোনো বিষয় নিয়ে প্রাণনাশের হুমকি, বা পারিবারিক বা সামাজিক শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট হতে পারে বা এমন কোনো কাজ করতে পারে, যার কারনে শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট হতে পারে। আর এটিই মূলত ১০৭ ধারার আওতাধীন। 

১০৭ ধারা মামলা (১০৭ ধারা মামলার শাস্তি)

  • দণ্ডবিধির ১০৭ ধারা “শান্তিভঙ্গের আশঙ্কা” রোধে ব্যবহৃত হয়।
  • যদি মনে করা হয় যে কেউ শান্তিভঙ্গ করতে পারে, আদালত তাকে মুচলেকা দিতে নির্দেশ দিতে পারে।
  • মুচলেকা না দিলে, কারাদণ্ড হতে পারে।

১০৭ ধারা মামলার জবাব

  • নোটিশ পাওয়ার পর আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করা উচিত।
  • কারণ দর্শানো : কেন মুচলেকা দেওয়া উচিত নয়, তার যুক্তিসঙ্গত কারণ লিখতে হবে।
  • প্রমাণ : যদি থাকে, প্রমাণ সংগ্রহ করতে হবে।
  • সাক্ষী: যদি থাকে, সাক্ষীদের তালিকা তৈরি করতে হবে।
  • শুনানি: আদালতে শুনানিতে উপস্থিত হতে হবে।
  • আদালতের সিদ্ধান্ত: আদালত মুচলেকা নেওয়া, জামিন দেওয়া, অথবা মামলা খারিজ করার সিদ্ধান্ত দিতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

  • সময়সীমা: নোটিশে উল্লেখিত সময়সীমার মধ্যে জবাব দিতে হবে।
  • আইন: আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত।
  • সহায়তা: আইনজীবীর সাহায্য নেওয়া উচিত।

উল্লেখ্য

  • এই তথ্য শুধুমাত্র সাধারণ জ্ঞানের জন্য।
  • আইনি পরামর্শের জন্য একজন আইনজীবীর সাথে যোগাযোগ করুন।
১০৭ ধারা মামলা কি এবং বিস্তারিত

এছাড়াও ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১০৭ ধারা মামলার প্রথম ধাপ থানা জিডি বা সাধারণ ডায়েরি। তবে এই অভিযোগ টি যথাযথ সাক্ষ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে পুলিশ এই জিডি থেকে নন-প্রসিকিউশন প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন এবং অভিযুক্ত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে পারেন।

এটি পড়ুনঃ   মিথ্যা সাক্ষ্য দিলে করণীয় কী? - না জানলেই বিপদ, তাই জানুন আজই

কেউ যদি আপনাকে উদ্দেশ্য মূলক হুমকি দিলে,যা কার্যকর হতে পারে এমন আশংকা রয়েছে বা যে কোনো সময় ভয়ভীতি দেখালে আপনি ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১০৭ ধারা মতে মামলা করতে পারবেন। সাধারণত এই ধারায় প্রতিকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার মুচলেকা মামলা বলে পরিচিত। 

১০৭ ধারার মামলা কোথায় করতে হয়

ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১০৭ ধারার মামলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে করতে হয়। আইনজীবীর মাধ্যমে আরজি উপস্থাপন করতে হবে। ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১০৭ ধারার মামলা করার পর প্রতিপক্ষ কে কিংবা অভিযুক্ত ব্যাক্তি কে শান্তি বজায় রাখার জন্য বন্ড বা মুচলেকা সম্পাদন করার জন্য বাধ্য করা যায়। মামলার আরজি তে মূল অভিযুক্ত ব্যাক্তির নাম-ঠিকানা সহ কেনো এবং কি কারণে আপনার শান্তি বিনষ্ট করেছে বা কোনো ভয়ভীতি দেখিয়েছে।এবং ঘটনার দিন, তারিখ, সময় উল্লেখ করতে হবে।এছাড়াও আরজির সাথে আরও কোনো প্রমাণ থাকলে বা থানায় জিডি বা সাধারণ ডায়েরি করা থাকলে তা ফিরিস্তি সহ দাখিল করতে হবে।

১০৭ ধারা জামিন যোগ্য কি না 

ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১০৭ ধারায় অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তি জামিন পাওয়ার যোগ্য। অর্থাৎ ফৌজদারি কার্যবিধি ১০৭ ধারা জামিন যোগ্য ধারা। এই ধারার মামলার মূল উদ্দেশ্য হলো অভিযুক্ত ব্যাক্তি কে বন্ড বা মুচলেকা সম্পাদন করার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাক্তির ভবিষ্যৎ জীবনের নিরাপত্তা প্রদান করা।

১০৭ ধারার সত্যতা পেলে আদালত কী করবেন 

ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১০৭ ধারায় মামলা করলে আদালত প্রাথমিক শুনানি তে অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পাইলে অভিযুক্ত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো নোটিশ এর জন্য আদেশ দেবেন। এরপর অভিযুক্ত ব্যাক্তি আদালতে হাজির হয়ে মুচলেকা সম্পাদন করবেন। মুচলেকা বলতে বোঝানো হয় যে, ভবিষ্যতে আর কোনো প্রকার হুমকি দিবে না বা ভয়ভীতি দেখাবে না।

অভিযুক্ত ব্যাক্তি নিজে কে নির্দোষ দাবি করে থাকে, তাহলে লিখিত জবাব দাখিল করতে পারেন। এই লিখিত জবাবে হুমকি দেন নি এবং ভবিষ্যতে কোনো প্রকার হুমকি দিবে না বা ভয়ভীতি দেখাবেন না বা কোনো ধরনের শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করবে না এই মর্মে অঙ্গীকার করবেন। এরপর এই মামলার অভিযুক্ত ব্যাক্তি দোষ স্বীকার না করে, তাহলে সাক্ষীর জন্য আদেশ দিবেন এবং সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে অভিযুক্ত ব্যাক্তি দোষী প্রমাণিত হলে আদালত মুচলেকা সম্পাদন করার আদেশ দিবেন। 

এটি পড়ুনঃ   থানায় জিডি করতে কি কি লাগে - জিডি করার নিয়ম

সাধারণত ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১০৭ ধারার মামলা করা হলেও এই আইনে আদালতে ১০৭ ধারার সাথে ১১৭ (গ) ধারা অনুযায়ী মুচলেকা সম্পাদন করার মাধ্যমে প্রতিকার পাইবার জন্য আবেদন করতে হয়। আদালত ১১৭ (গ) ধারা অনুযায়ী মুচলেকা সম্পাদনের আদেশ দিয়ে থাকেন। 

১০৭ ধারার মিথ্যা মামলা হলে করণীয়

ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১০৭ ধারার মামলা উভয় পক্ষের মধ্যে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য জারি করা হয়। এই মামলায় কেউ আসামী নয়। এই মামলায় বরং দুই টি পক্ষ থাকে। এজন্য ১০৭ ধারার মামলা হলে ভয় পাবার কিছু নেই। ১০৭ ধারার কারণ দর্শানো নোটিশ পাইলে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবী পরামর্শ নিবেন এবং আদালতে হাজির হয়ে বন্ড বা মুচলেকা দিবেন বা আপনি অপরাধ না করে থাকলে লিখিত জবাব দিবেন এবং যথাযথ সাক্ষ্য প্রমাণ দ্বারা নিস্পত্তি হবে।

১০৭ ধারার মামলায় সতর্কতা 

ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১০৭ ধারার মামলা হলে একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে হাজির হয়ে বন্ড বা মুচলেকা সম্পাদন করে সাথে সাথে জামিন পেয়ে যাবেন। এরপর আদালতের আদেশ অনুযায়ী পরবর্তীতে নির্দিষ্ট তারিখ অনুযায়ী নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে হবে। আদালতে হাজির না হলে বা মুচলেকা সম্পাদন না করলে গ্রেফতারী পরোয়ানা বা ওয়ারেন্ট ইস্যূ আদেশ দিবেন। এই ধারা সাধারণত এক বছরের অনধিক সময়কাল পর্যন্ত শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য উপযুক্ত জামিনদার সহ মুসলেকা সম্পাদন করতে হবে। মনে রাখবেন যে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১০৭ ধারার মামলা গুরুতর কোনো মামলা নয়। মামলা টি বন্ড বা মুসলেকা সম্পাদন করার মাধ্যমে বা যথাযথ সাক্ষ্য প্রমাণ দ্বারা নিস্পত্তি হবে। তবে এই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আইনজীবীর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবেন এবং নির্ধারিত তারিখে হাজিরা দিবেন।

WhatsApp Group Join Now
Avatar of Joe Smith
Joe Smith

Hi, I am Joe Smith. I love to share my thoughts on my website, loves to write on various topics according to the trends.

Leave a Comment

Home
Join
Facebook
Search
হারানো Gp সিম বন্ধ করার উপায়, সহজ পদ্ধতি জেনে নিন মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া এবং দিলে করণীয় কী? জানুন স্টোরি থেকে