সফলতার শিক্ষনীয় গল্প
যে কাজ আমরা মন থেকে করি না। সেই কাজের পরিনাম তো আমাদের মন মত হয় না। যদি আপনি আপনার মন থেকে কোনো কাজ না করেন। তাহলে সেই কখনোই ভালো মতো হতে পারে না। অনেক স্টুডেন্ট পড়তে তো বসে যায়। কিন্তু তো তারা মন থেকে পড়তে তো চায় না। আর এই কারণেই ঐ স্টুডেন্ট গুলো না ঠিক করে পড়তে পারে। আর না কোনো কিছু মনে রাখতে পারে।
আমরা সবাই অনেক কিছু শিখতে চাই। কিন্তু আমরা মন থেকে কোনো কিছু শিখি না। এটাই হলো কারণ, যে কারণে আমরা কোনো কিছু শিখতে পারি না। কোনো কিছু বুঝতে পারি না। যদি আপনি কিছু মানুষ কে হাটার জন্য বলেন।
তাহলেই তারা ক্লান্ত হয়ে যাবে। দৌড়ানো তো অনেক দূরের কথা। তাহলে কি হবে, যদি ঐ মানুষ গুলো কে এটা বলে দেওয়া হয়, যদি তুমি রোজ ১কিলোমিটার দৌড়াতে পারো। তাহলে আগামী এক সপ্তাহ পরে তোমাকে আইফোন দেওয়া হবে। অথবা তুমি যদি রোজ ভোর ৪টায় ঘুম থেকে উঠতে পারো। তাহলে এর পরিবর্তে প্রতিদিন হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। তাহলে দেখবেন। ঐ মানুষ গুলো সহজেই এক কিলোমিটার সহজেই দৌড়াতে পারবে। আবার ভোর চার টায় ওঠতে ও পারবে। কারণ এর পেছনে একটি লোভ কাজ করে।
সফলতা নিয়ে পুরনো একটি গল্প
অনেজ পুরনো দিনে এক গল্প আছে। শহরে খুবই ফেমাস এক কার্পেন্টার ছিলো। আর ঐ কার্পেন্টার খুবই সুন্দর সুন্দর বাড়ি তৈরি করতেন। আর ওনার হাতের কাজ এতো সুন্দর ছিলো। সেটা যেই দেখতো যেই প্রশংসা করতো। কারণ ওনি ওনার আনেক ছোট ছোট কাজে খুবই মনোযোগ দিতো। আর এই কারণেই ওনার কাজ সবাই পছন্দ করতো। আর অনেক দূর দূর থেকে অনেক মানুষ এসে ওনার কাজ দেখতো। ওনাকে সবাই বলতো যে,আপনি কত সুন্দর ঘর তৈরি করেন।
আপনার হাতের কারুকার্য দেখে চোখ সরানো যায় না। আপনি এতো সুন্দর কারুকাজ কিভাবে করতে পারেন। কোনো রকম মেশিন নেই।কিভাবে এতো সুন্দর ঘর কিভাবে তৈরি করা সম্ভব। তখন ঐ কার্পেন্টার কেবল একটিই উত্তর দিতো। সেটা হলো আমি আমার কাজ মন থেকে করি। আমি যখনই আমি আমার কাজ করা শুরু করি। তখন আমি আমার ঐ কাজের মধ্যে হারিয়ে যায়। আমি তখন তার মধ্যে অন্য কিছু দেখতে পাই না। কারোর কোনো কথা শুনতে পাই না। আর অন্য কোনো দিকে আমার মনোযোগ ও যায় না। আমি আমার কাজে ১০০% দিয়ে চেষ্টা করি। আর এই কারণেই এই কাজের পরিনাম টা সুন্দর হয়।
যা আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। ধীরে ধীরে সময় পার হতে থাকে। আর ঐ কার্পেন্টার অনেক অর্থ রোজগার করে নেয়। যতটা অর্থ ঐ কার্পেন্টার রোজগার করে। তার থেকে বেশি ঐ কার্পেন্টারের মালিক রোজগার করে। ধীরে ধীরে ঐ কার্পেন্টারের বয়স হয়ে যায়। এখন আর ওনার ভেতরে কাজ করার মত শক্তি ছিলো না। কিন্তু ঐ অভিজ্ঞতা টা আজও ওনার ভেতর ছিলো। এরপর ঐ কার্পেন্টার ভাবে, এবার আমার অবসর নেওয়া দরকার। কারণ আমি অনেক দিন থেকে কাজ করছি। এছাড়া ও আমি অনেক অর্থ ও রোজগার করে নিয়েছি।
এখন আর আমার কাজ করার প্রয়োজন নেই। আর এখন আমি বাকি টা সময় নিজের সাথে কাটাতে চাই। এটা ভেবে ঐ কার্পেন্টার ঐ কোম্পানির মালিকের কাছে যায় আর বলে। মালিক আমি আমার কাজ ছেড়ে দিতে চাই। আমি চাই, বাকি সময় টা আমি আমার নিজের জীবনের সাথে বেঁচে থাকবো। আর এই কারণেই আমি অবসর নিতে চাই। কার্পেন্টারের কথা শুনে মালিক কিছু বলে নি। কারণ মালিক চিন্তায় করে যায়, এটাই ভেবে, যে তার সব চেয়ে জনপ্রিয় কার্পেন্টার কাজ ছেড়ে দিচ্ছে। এর কারণ তার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। তার পরেও যেহেতু এই কার্পেন্টার ছোট বেলা থেকে এই কোম্পানি তে কাজ করেছে। তাই ঐ কোম্পানির মালিক কার্পেন্টার কে মানা করতে পারে নি।
আর ঐ কার্পেন্টার কে বলে ঠিক আছে। আপনি যদি চলে যান, সে বিষয়ে আগামীকাল কথা বলবো। এরপর কার্পেন্টার বলে যে, ঠিক আছে। আমি চলে যাচ্ছি।আপনি ভালো ভাবে চিন্তা করে আমাকে জানাবেন।
পরের দিন সকালে কার্পেন্টার পুনরায় কাজে চলে যায়। আর কাজ শেষ করে, ফিরে এসে মালিক কে বলে। কাল।আমি আমার অবসরে যাওয়া জন্য বলেছিলাম। ঐবিষয়ে আপনি কি চিন্তা করেছিলেন। এরপরে মালিক বলেন, ঠিক আছে। আপনি অবসরে যেতে পারেন। কিন্তু আমার একটি শেষ কাজ আপনাকে করে দিতে হবে। আর আমি চাই, আপনি আপনার জীবনের শেষ ঘর টা তৈরি করুন। এটা শুনার পর ঐ কার্পেন্টার মনে মনে একটু রেগে যায়। কারণ আজ তার অবসরের দিন, আজ তাহে বিদায় দেওয়ার দরকার।
কিন্তু মালিক তাকে দিয়ে অন্য কাজ করিয়ে নিতে চায়। কিন্তু তার মালিক বলেছে, তাই তাকে এই কাজটি করতেই হবে। আর ঐ কার্পেন্টার না চাইলেও নিজের যন্ত্রপাতি নিয়ে নিজের কাজে চলে যায়।
যেহেতু এই কার্পেন্টার আগে থেকেই অবসর এর মন তৈরি করে নিয়েছিলো। কার্পেন্টার ভেবেই নিয়েছিলো সে আর কাজ করবে না। যেহেতু মালিক বলেছে, এজন্য কোনো রকম একটি ঘর তৈরি করেছে। যে ঘর তৈরি করতে একদম ইচ্ছে ছিলো না। সেই ঘরের কাজ একদম ভালো ছিলো না। কিন্তু তারপরে কার্পেন্টার কাজ শেষ করে অফিসে ফিরে আসে। এসে বলে, আপনার কাজ টি আমি শেষ করে দিয়েছি। আপনার ঘর তৈরি হয়ে গেছে। এখন বলুন, আর কি করতে হবে।
তখন কোম্পানির মালিক বলে। আসোলে আমি সারপ্রাইজ দিতে চাইছিলাম। তখন ঐ কার্পেন্টার জিজ্ঞেস করে, কি রকম সারপ্রাইজ? এরপর কোম্পানির মালিক বলে, আসলে আমি আপনাকে একটি ঘর উপহার দিতে চেয়েছিলাম। এজন্য আমি মনে করে ছিলাম। আপনি আপনার জীবনের শেষ ঘর টা অনেক সুন্দর করে তৈরি করবেন। সেই ঘর টাই আমি আপনাকে উপহার দিবো।আর যে ঘর টা তৈরি করে এসেছেন।
সেই ঘর টাই আমার তরফ থেকে আপনার জন্য উপহার। আপনি এটা কোম্পানি উপহার হিসেবে গ্রহণ করুন। এটা সোনার পরে ঐ কার্পেন্টারের মন খারাপ হয়ে যায়। কার্পেন্টার ভাবে, এতো বড়, এতো বড় বোকামি আমি কি করে করলাম। যদি আমি এই কথা টা আগে জানতাম। যে এই ঘর টা, আমি আমার নিজের ঘর তৈরি করছি। তাহলে আমি আমার সারা জীবনে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এমন ঘর তৈরি করতাম। যা দেখে মানুষ অবাক হয়ে যেত। আমার ঘর দেখে মানুষ এতো প্রশংসা করতো। যার কোনো সীমা থাকতো না। কিন্তু আমি আমার ঘর এতো খারাপ কি করে তৈরি করতে পারি। যদি আমি আগে জানতে পারতাম।
যে এই ঘর টা আমাকে উপহার দেওয়া হবে। অথবা আমি আগে যে ঘর গুলো কে তৈরি করেছি। ঠিক নিজের মন থেকে ঘর টা তৈরি করতাম।
তাহলে আজ হয়তো আমাকে এতো আফসোস করতে হতো না। কিন্তু যা হবার, সেটা তো হয়ে গেছে। এখন আফসোস করে আর লাভ হবে না। এই গল্প টা হয়তো ছোট। কিন্তু এখান থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। দেখুন,জীবনে সব সময় একটি কথা মনে রাখবেন। যে কাজ টি আপনি করবেন। সেই কাজ টি আপনি মন থেকে করবেন। অথবা সেই কাজ টি আপনি করবেন না। যখন একটি কাজ মন থেকে করি। তখন আমরা সেই কাজে, সমস্ত মন,সমস্ত এনার্জি, সমস্ত অভিজ্ঞতা কে লাগিয়ে দিই। আর ঐ কাজ কে যত সম্ভব সুন্দর করে করার চেষ্টা করি। কারণ ঐ কাজে আমরা আমাদের ১০০% দিই।
যখন কোনো কাজে আমরা ১০০% দিও। সেই কাজে আমরা পরিনাম টাও ভালো হতো। কথায় বলে, তাড়াহুরোর কাজ হলো শয়তানের। ঐ কার্পেন্টারের সর্বশেষ যে বাড়ি টা তৈরি করেছিলো। সেই বাড়ি টা দেখে মনে হতো। যেন কোনো বাচ্চা ছেলে এই ঘর টা তৈরি করেছে। দেখুন যারা মন থেকে পরিশ্রম করতে চায়। তারা তাদের কাজে জীবন লাগিয়ে দেয়। এটাই তাদের একদিন সফল তৈরি করে।
আপনাকে একটা কথা বুঝতে হবে। ফ্যাশান শুরু থেকেই সবার মধ্যে থাকে না। কোনো একটি কাজে দক্ষতা, ঐ কাজে মনোযোগ দেওয়া। যখন ঐ কাজ টা মানুষ কত টা ভালোবেসে করছে। এই সব কিছুই ঐ কাজের মাস্টার তৈরি করে। আপনি যে কোনো একটি ক্যাটাগরি কে বেছে নিন। সেটা পড়াশোনা, বিজনেস, ক্রিকেট, হকি,অথবা যে কোনো একটি ফিল্ড হতে পারে। যে কাজ টি আপনার পছন্দ। সেই কাজেই ১০০% দিয়ে দিন। তখন আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন। যে কোনো কাজ ই ছোট বড় হয় না। শর্ত কেবল এতো টুকু ই, যে সেই কাজ টি মন থেকে করতে হবে।
পড়াশোনা যাদের কাছে বোঝা মনে হয়। যারা পড়াশোনা করতে ভয় পায়। তারা একটা কথা মনে রাখবেন। এটা সত্যি নয়। এই কথা টা সত্যি, যদি জীবনে সফল হতে হয়। পড়াশোনা টাই সব কিছু নয়। জীবনে সফল হওয়ার জন্য একটি মানুষের কাছে আরও অনেকগুলো অপশন থাকে। কিন্তু আমাদের এই কথা টা ও স্বীকার করতে হবে যে, এই পৃথিবীতে এমন একটি অপশন ও নেই। যেখানে কোনো রকম পরিশ্রম ছাড়াই সফলতা পেয়ে যাবেন। তাই আপনার পরিশ্রম টা হয় পড়াশোনার মধ্যে করতে হবে।
অথবা আপনাকে এমন একটি ফিল্ড বেছে নিতে হবে। যে ফিল্ড টি কে আপনি পছন্দ করেন। অথবা আপনার মধ্যে এমন একটি অভিজ্ঞতা কে বাড়িয়ে তুলতে হবে। যেটা আপনার মধ্যে আছে।
আর আপনার মনে হয়,যে এই অভিজ্ঞতা কে একদিন প্রফেশনাল তৈরি করতে পারবেন। তাহলে আপনার অভিজ্ঞতার উপর ১০০% দেওয়া শুরু করুন। দেখুন, জীবনে চলতে থাকাটা খুবই দরকার। যদি আপনি রাস্তা পেয়ে যান। তাহলে আপনি সেই রাস্তায় চলতে থাকুন। আপনি প্রতিদিন আপনার ১০০% দিন। যদি ঐ রাস্তা টা পছন্দ না হয়। তাহলে আপনি আপনার জীবনের একটি আলাদা রাস্তা তৈরি করুন। কিন্তু এরজন্য একটি শর্ত আছে। যতক্ষণ ঐ রাস্তায় চলতে হবে।
যতক্ষণ না আপনার দ্বিতীয় রাস্তাটা পেয়ে যান। আর যতক্ষন না এটা আপনার মনে হবে, যে এই দ্বিতীয় রাস্তাটা সঠিক। আর দ্বিতীয় রাস্তাটা তে খুশিতে থাকবেন। তখন আপনাকে দ্বিতীয় রাস্তাটা বেছে নিতে হবে। দেখুন এই পৃথিবীতে কারোর কিছু যায় আসে না যে,আপনি কি কি করছেন। তাই আপনি যদি সফল হতে চান। আর এই সফলতা টা অন্য মানুষের জন্য হয়। তাহলে আপনাকে আর কিছু না ভেবে পরিশ্রম করতে হবে। কেবল চিন্তা করবেন না। আপনি শুরু করে দিন। আপনি দাড়িয়ে পড়বেন না।
আপনি কেবল চলতে থাকুন। সফলতা আপনি একদিন অবশ্যই পাবেন।আপনাকে কেবল এগিয়ে চলতে হবে। আপনি এটা ভাববেন না যে, রাস্তাটা কেমন হবে। যদি আপনার মধ্যে বিশ্ব থাকে। তাহলে চলতে থাকুন। তাহলে আপনি একদিন জিতে যাবেন। আর পরিশ্রম করে সমস্ত সপ্ন সত্যি করা যায়। এই কথা টা আপনি ও শিখে যাবেন।